আইনজীবী নেই, জামিন অনিশ্চিত

ডিসেম্বর 3, 2024 - 14:12
ডিসেম্বর 4, 2024 - 15:54
 0
আইনজীবী নেই, জামিন অনিশ্চিত
আর্কাইভ থেকে

আইনজীবীদের হট্টগোল ও বাঁধার মুখে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী (চিন্ময় প্রভূ) -এর জামিনের শুনানি আগামী ২রা জানুয়ারি পুনঃধার্য করেছেন আদালত।

আজকে (৩রা ডিসেম্বর) তাঁর জামিনের শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও আসামিপক্ষের কোন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সাইফুল ইসলামের আদালত এই সিদ্ধান্ত দেন।

এজলাসের মধ্যেই আইনজীবীরা গত ২৬ নভেম্বরে সংঘর্ষরত জনতার হাতে নিহত আলিফের মামলায় চিন্ময় প্রভূকে আসামী করার দাবি জানান, এমনকি সেদিন আদালত প্রাঙ্গণে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায়ও তাঁকে আসামি করার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এসময় তারা 'ইসকন নিষিদ্ধ করতে হবে', 'আলিফের বাংলায় ইসকনীদের ঠাঁই নাই', 'নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবর', 'খুনি হাসিনার দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান' সহ নানান ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।

এদিকে, চিন্ময় প্রভূর পক্ষে কোন আইনজীবীকে হলফনামা দিতে দেয়া হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন একাধিক আইনজীবী। হলফনামা দিলে দেশছাড়া ও সপরিবারে 'জবাই করার' হুমকিও দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

এর আগে, গত ২৭ ও ২৮ নভেম্বর পরপর দিন ধার্য করার পরেও আইনজীবীদের আন্দোলন ও হুমকির মুখে শুনানি করতে পারেননি আদালত।

প্রসঙ্গত, গত ২৫শে নভেম্বর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে চিন্ময় প্রভূকে 'নিরাপত্তা হেফাজতের' কথা বলে আটক করে ঢাকার ডিবি। পরে সনাতনীদের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখেই ২৬শে নভেম্বর 'রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায়' চট্টগ্রাম আদালতে ওঠানো হয় তাঁকে। সেসময় আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলো হাজার হাজার সনাতনী নারী-পুরুষ। তারা চিন্ময় কৃষ্ণের জামিনের দাবিতে বিক্ষোভ করে এবং তাঁকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আটকে দেয়। সেসময় বিক্ষোভরত সনাতনীদের উপরে আচমকা লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবি সদস্যরা। তাদের সাথে যোগ দেয় স্থানীয় মুসল্লী, বিএনপি'র নেতা-কর্মী ও  জামায়াত-বিএনপি'র আইনজীবীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুই পক্ষের সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের অঞ্চলেও। কোর্ট হাউজের পাশের গলিতে হিন্দুদেরকে ধাওয়া দিতে গিয়ে পা ফসকে পড়ে যান জামায়াতে ইসলামীর সদস্য আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। গণপিটুনিতে গুরুতর আহত আলিফকে হাসপাতালে নেয়ার পরে মারা যান তিনি।

এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৩ জনকে আটক করেছে চট্টগ্রাম পুলিশ, তবে তাদের শুধু ৭ জনের তথ্য প্রকাশ করেছে। যদিও সেদিন বিকালেই প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছিলো, আক্রমণে ৪ আওয়ামী লীগ ও ২ ছাত্রলীগ কর্মীকে ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করেছে পুলিশ। কিন্তু পরবর্তীতে উপস্থাপিত ৭ জনের কারো দলীয় সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি, বরং তাদের ৩ জন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলো না বলে দাবি করা হয়েছে।

সেদিনের ঘটনায় ২ মুক্তিযোদ্ধা, ৬ আইনজীবী, ৩৮ নারী, ২ শিশু, ৪ সন্যাসী সহ দুই শতাধিক সনাতনী আহত হয়েছেন। চিকিৎসা নিতে গিয়ে আটক হয়েছেন ১৩ হিন্দু ছাত্র।

সেদিন রাতেই চট্টগ্রামের ১৮টি হিন্দু বাড়ী ও ৩টি মন্দিরে ভাংচুর ও লুটপাট চালায় স্থানীয় দুর্বৃত্তরা। পাশাপাশি হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুঠের ঘটনা ঘটেছে দিনজাপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকায়।

আপনার অনুভূতি কি?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow