আ.লীগ আমলে ৩৬টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ

ডিসেম্বর 3, 2024 - 13:29
 0
আ.লীগ আমলে ৩৬টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ
লাইলিপট্টির বর্তমান অবস্থা। ছবি: খবরের কাগজ।

আজ থেকে ২৫ বছর আগের কথা। ১৯৯৯ সালে ময়মনসিংহ শহরের প্রাণকেন্দ্র গাঙ্গিনারপাড়ের এ বি গুহ রোডের একটি ঘটনা। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সুরুজ্জামান সরকার ও সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা দবির হোসেন ভূঁঞা উচ্ছেদ করেন বেশ কয়েকটি হিন্দু পরিবারকে। এক, দুই, তিন নয়, ৩৬টি হিন্দু পরিবারকে একযোগে উচ্ছেদ করা হয়। তিন পুরুষের বাপ-দাদার ভিটা থেকে সে সব পরিবার রাতারাতি উদ্বাস্তু হয়ে পড়ে। এ নিয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়। তদন্তে কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসে অজগর।

ময়মনসিংহ শহরের কেন্দ্রস্থল গাঙ্গিনারপাড় ট্রাফিক মোড়। মোড়ের পাশে স্টুডিওর গলিতে এগোলেই বাম পাশে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়। সেটি পেরিয়ে কয়েক পা সামনে গেলেই দুটি রাস্তা। একটি বড়, অন্যটি সরু। বড় রাস্তাটি চলে গেছে শিববাড়ির দিকে। অন্যটি কানাগলি। টিমের গন্তব্য ওই কানাগলিতে। জায়গাটির নাম লালালজ। সরকারি নাম এ বি গুহ রোড। তবে স্থানীয়রা চিনেন ‘লাইলিপট্টি’ নামে। এই হিন্দুপ্রধান পাড়া থেকেই উচ্ছেদ হয় হিন্দু পরিবারগুলো। 

সেখানকার আদি বাসিন্দারা জানান, পাড়াটিতে একটি বড় মাঠ ছিল। মাঠের বাম পাশে ছিল বড় একটি পুকুর। ডান পাশে ছিল সিঁড়ি-বারান্দা দেওয়া বিশাল কাঠের বাড়ি। সেই বাড়িতেই বাস করতেন এ পাড়ার মালিক লালাশঙ্কর রায়। সেই বাড়ির লাগোয়া সারি সারি কাঁচাপাকা বাড়ি। বর্তমান চিত্র দেখে সেটা বোঝার উপায় নেই। একে একে যোগাযোগ করা হয় ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। এদের মধ্যে অধিকাংশ ময়মনসিংহ শহরেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাস করছেন। অনেকে চলে গেছেন ঢাকায়, কেউবা ভারতে।

বলা হয়, এসব জমি স্বর্ণের চেয়েও দামি, মূল্য শতকোটি টাকা। যার দখলে পুরো পাড়াটি, তিনি বিপুল অর্থের মালিক। ইচ্ছা করলেই পুরোনো ঘর ভেঙে নিমিষেই অট্টালিকা তুলতে পারেন তিনি। কিন্তু না। তিনি তা করছেন না। বহু বছর ধরে এভাবেই জমি দখলে রেখেছেন। কিন্তু কেন? ভবন করতে বাধা কোথায়? দখলকারীর কবজায় এলই বা কীভাবে? এসবের উত্তর খুঁজেছে অনুসন্ধান টিম।

যার দখলে জমি

বর্তমানে সব জমি যার দখলে তার নাম সুরুজ্জামান সরকার। মোটা দাগে বলতে গেলে স্বনামধন্য ব্যবসায়ী হিসেবেই শহরে পরিচিত তিনি। সবাই জানে ব্যবসার মাধ্যমেই অঢেল টাকার পাহাড় বানিয়েছেন এই সুরুজ্জামান। তবে তাকে নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। কারণ একটাই, হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার পুরো জমিই তার কবজায়। তার মালিকানায় আসা নিয়েও ভুক্তভোগী হিন্দুদের অভিযোগের শেষ নেই। ধনাঢ্য আর প্রভাবশালী হওয়ায় সুরুজ্জামানের সামনে দাঁড়িয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলবে, এমনটি কল্পনাও করতে পারে না কেউ। লাইলিপট্টির হিন্দু অধ্যুষিত ওই এলাকার পুরো জমির মালিকানায় আসার পর থেকেই আলোচনায় এসেছেন সুরুজ্জামান।

সুরুজ্জামানের ক্ষমতার উৎস

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সুরুজ্জামান সরকার ছিলেন সাবেক ধর্মমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের প্রধান অর্থদাতা। শহরে ‘ওপেন সিক্রেট’ ছিল মতিউর রহমানের যাবতীয় নির্বাচনিসহ অন্যান্য ব্যয় বহন করতেন সুরুজ্জামান। সেই সূত্রে তিনি আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ভোগ করতেন। তারই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে মতিউর রহমানের ছেলে সাবেক এমপি মোহাম্মদ মোহিত উর রহমান শান্তর সময়। বাবা-ছেলে দুজনই ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। 

ভুয়া দলিলে মালিকানা

ভুক্তভোগী হিন্দু পরিবারগুলোর দাবি, ভুয়া দলিল করে সুরুজ্জামান পুরো সম্পত্তি দখল করেছেন। এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ওই পাড়ারই বাসিন্দা দবির হোসেন ভূঁঞা। ২৫ বছর আগেই পাড়ার সবাই চলে গেছেন অন্যত্র। আর চার-পাঁচটি পরিবার সেখানেই জমি কিনে বাস করছেন। এর পেছনেও আছে রহস্য। সুরুজ্জামান ও দবির দেখাতে চেয়েছেন, উচ্ছেদের ঘটনাটি যেন হিন্দু সম্পত্তি দখলের মতো কারও চোখে না পড়ে। সুরুজ্জামান জমির ভুয়া দলিল করে বিপুল অর্থের বিনিময়ে নিজ নামে জমির মালিকানা নিয়েছেন উচ্চ আদালত থেকে। পুরো এলাকায় অন্তত তিন একর জমি রয়েছে। লাইলিপট্টিতে একসময় বসবাস করা ভুক্তভোগী পরিবারগুলো চায়, বর্তমান সরকার বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করুক। তাহলে এসব খাস জমি পেতে পারে সরকার। এদিকে সুরুজ্জামানের দাবি, জমিটি শহরের স্বদেশি বাজার এলাকার তৎকালীন নিউ ভ্যারাইটি স্টোরের মালিক হাজি শামসুল হকের কাছ থেকে কিনেছেন তিনি। শামসুল হক অনেক বছর মামলা চালিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে ওই জমির ডিক্রি নিজের নামে এনেছেন। ময়মনসিংহে ব্যবসা করলেও শামসুল হক ছিলেন ঢাকার বাসিন্দা।

জমির প্রকৃত মালিক

পুরো পাড়াটির প্রকৃত মালিক লালাশঙ্কর রায়। তিনি ছিলেন স্থানীয় জমিদার পরিবারের সন্তান। সবার কাছে তিনি ছিলেন ‘লালা বাবু’ নামে পরিচিত। এই লালা বাবু ছিলেন বিপত্নীক ও নিঃসন্তান। একাকিত্ব ঘোচাতে তিনি বাইজি স্বর্ণকুমারী দেবীকে রক্ষিতা হিসেবে রাখেন। একসময় স্বর্ণকুমারীকে বিয়ের আশ্বাসও দেন লালা বাবু। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, লালা বাবু ও স্বর্ণকুমারী দেবী স্বামী-স্ত্রীর মতোই ওই পাড়ায় একই বাড়িতে বাস করতেন। লালাশঙ্কর শেষ বয়সে স্বর্ণকুমারীর কাছে পাড়ায় বসবাস করা ভাড়াটিয়াদের দেখভালের মৌখিক ক্ষমতা দেন।

ভুক্তভোগীদের বক্তব্য

সে সময় লাইলিপট্টিতে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করা একজন প্রবীণ ব্যক্তি (৬৪) নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ১৯৬৭ সালে স্বর্ণকুমারী দেবী ওরফে লাইলি মারা যান। সেখানে থাকা বাসাগুলোয় ভাড়া থাকতেন ৩৬টি হিন্দু পরিবার। একেক জনের সংসারে ছিল ৪ থেকে ৮ জন সদস্য। লালাশঙ্করের মৃত্যুর পর নিজেই সব সম্পত্তি দেখাশোনা করাসহ ভাড়া আদায় করতেন স্বর্ণকুমারী দেবী। কিন্তু একা সব সামলাতে কষ্ট হচ্ছিল তার। এ জন্য বিনোদ রায় নামের একজনকে ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দেন। বিনোদ ছিলেন শিক্ষিত। ময়মনসিংহ শহরের এই বাসিন্দা সে সময় কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করার সময় দবিরের পরিবারকে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতে দেন বিনোদ। চাকরির সুবাদে ধীরে ধীরে স্বর্ণকুমারী দেবীর বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন বিনোদ। স্বামী-সন্তানহীন স্বর্ণকুমারীর জমি নিজের কবজায় নিতে কৌশল করতে থাকেন তিনি। ১৯৬৭ সালে লাইলি মারা যাওয়ায় সেই সুযোগ চলে আসে। লাইলির মৃত্যুর কিছুদিন পর বিনোদ এলাকায় ঘোষণা করেন, পুরো জমির মালিক তিনি নিজেই। লাইলির বাসায় বহু বছর ভাড়া থাকা ৩৬টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। কারণ হিন্দু পরিবারগুলো জানত, বিশাল এই জমির মালিক লালাশঙ্কর রায়। তিনি লাইলিকে জমি লিখে দিয়ে যাননি। লাইলিও কারও কাছে জমি বিক্রি করার মতো বৈধ মালিক ছিলেন না। তাই লাইলি এক শতাংশ জমিও কারও কাছে বিক্রি করেননি। কিন্তু এরই মধ্যে জানাজানি হয়, বিনোদ জমি বিক্রি করে দিয়েছেন স্বদেশি বাজারের ব্যবসায়ী হাজি শামসুল হকের কাছে, যা পুরোপুরি অবৈধ ও জালিয়াতি।

সে সময় লাইলিপট্টিতে পরিবারের সঙ্গে বাস করা অপর একজন বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকে এ বি গুহ রোডে (লাইলিপট্টি) আমাদের পরিবার বাস করে আসছিল। দাদার পর বাবাও একই এলাকায় ভাড়া থাকতেন। তখন দেখতাম, পাড়ার এক পরিবারের একজন আরেকজনের কাছ থেকে চাঁদা তুলে মামলার খরচ জোগাড় করে চালাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষ। ফলে মামলার খরচ দিতে কষ্ট হতো তাদের। পরিবারসহ স্থানীয়রা বলাবলি করতেন, এই জমির মালিক নেই। অথচ হাজি শামসুল হক অবৈধ উপায়ে জমির মালিক দাবি করছেন।’ 

লাইলিপট্টির আরেক বাসিন্দা নিঃসন্তান অক্ষয় দত্তের পালিত ছেলে কার্তিক দত্ত (৪৮)। তার পরিবারও এই লাইলিপট্টির বাসিন্দা ছিলেন। অক্ষয় দত্ত ময়মনসিংহ জংশন থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন ট্রেনে হকারি করতেন, মা অন্যের বাড়িতে ঠিকে কাজ করতেন। কার্তিক বর্তমানে শহরের গাঙ্গিনারপাড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থেকে স্বর্ণের দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘লাইলিপট্টির জমি নিয়ে সবার মনেই সন্দেহ রয়েছে। সবাই জানেন, জমির দলিলে বড় ধরনের কারচুপি রয়েছে। সুরুজ্জামান প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকে মুখ খুলতে ভয় পান।’ তিনি বলেন, ‘লাইলিপট্টির জমি সম্পর্কে ভালো বলতে পারবেন মৃত দুলাল সেনের ছোট ছেলে বাসু সেন।’ কার্তিকের কথামতো শহরের ব্যবসায়ী বাসু সেনের কাছে গেলে অজানা ভয় আর আতঙ্কে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করতে রাজি হননি তিনি। কার্তিকের মতো একই বক্তব্য দিয়ে মৃত অবণী পালের ছেলে বরুন পাল বলেন, ‘এই সম্পত্তি নিয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। কারণ আমার এতে কোনো লাভ নেই। সরকার চাইলে খতিয়ে দেখতে পারে।’ তবে এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন শহরের একটি বেসরকারি কলেজের অঙ্কের শিক্ষক, মৃত জীবনকৃষ্ণ পালের ছেলে গৌতম পাল রুমন। তিনি বলেন, ‘যখন থেকে বুঝতে শিখেছি, তখনই শুনেছি লাইলিপট্টির জমির মালিকানায় সমস্যা রয়েছে। যেহেতু বলা হয়, আদালত থেকে ডিক্রি আনা হয়েছে। তাই হিন্দু পরিবারগুলো চুপ হয়ে দখল ছেড়ে চলে যায়। আমি বাবা-কাকার কাছে শুনেছি, শেষ পর্যায়ে মামলা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন হিন্দুরা। অনেক বছর মামলা চালিয়ে ক্লান্ত হয়ে যান তারা। ফলে আদালতের বারান্দায় যাওয়াসহ আইনজীবীর কাছে যাওয়া বন্ধ করে দেন সবাই। একজন মামলার খরচ দিলে আরেকজন দেন না। এভাবেই মামলা চলতে থাকে। রায় পক্ষে এলে আসবে, না এলে নয়। একপর্যায়ে রায় বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে চলে যায়।’

লাইলিপট্টির জমি ক্রেতারা যা বলেন

আলোচিত লাইলিপট্টির একপাশের জমি বিক্রি করে দিয়েছেন সুরুজ্জামান সরকার। সে সময় ৩৬টি হিন্দু পরিবার প্রতিবাদ করে বলেছিল, ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে জমি কবজা করেছে। আত্মবিশ্বাস নিয়ে মামলায় যান তারা। অথচ ডিক্রি পেয়ে সুরুজ্জামান সরকার মালিকানায় এসেছে জানতে পেরে অন্য ব্যক্তিদের মতো এসব পরিবারের মধ্যে স্বপন আচার্য, অলক পাল, বিমান দাস ও মানিক দাসের পরিবার সুরুজ্জামানের কাছ থেকেই জমি কিনেছেন। অলক পাল নামে এক জমি ক্রেতা বলেন, ‘আমার পরিবার ওই সময় থেকেই লাইলিপট্টিতে ভাড়া থাকত। আদালত থেকে ডিক্রি পাওয়ার পর সুরুজ্জামান আমার বাবার কাছে সোয়া দুই শতাংশ জমি বিক্রি করেন। আমাদের কেনা জমির কাগজ বৈধ।’

যা বলছে অভিযুক্ত দবির হোসেন ভূঁঞার পরিবার

সরেজমিনে গিয়ে পাওয়া যায় দবিরের ছোট ভাই কামাল হোসেন ভূঁঞা ওরফে মিঠু ভূঁঞা ও তার এক বড় ছেলে মাসুদ হোসেন ভূঁঞা টিটুকে। লাইলিপট্টির জমি সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্ষুব্ধ মেজাজে মিঠু ভূঁঞার ছেলে টিটু বলেন, “জমির মূল মালিক ছিলেন স্বর্ণকুমারী দেবী। এই মালিকানা থেকে একপর্যায়ে হাজি শামসুল হক মালিকানায় আসেন। এরপর সুরুজ্জামানের কাছ থেকে আমার বড় চাচা দবির হোসেন ভূঁঞা কিনেছেন। তিনি প্রতারণার মাধ্যমে জমি নেননি। তিনি ছিলেন ‘ক্লিন ইমেজের’ মানুষ। ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নেতৃত্বও দিয়েছেন দবির হোসেন ভূঁঞা।” কিন্তু সাল-তারিখ হিসেবে সেই দাবি ভিত্তিহীন বলে মনে হয় প্রতিবেদকের। কারণ সুরুজ্জামান জমি দখলে নেওয়ার অনেক আগেই দবির হোসেন ভূঁঞা লাইলিপট্টিতে বাস করে আসছিলেন। এমনকি ভাড়াটিয়া থেকে নিজের জমি বলে তিনি দয়াময় আশ্রমসহ পাড়ার বেশ কিছু অংশ বিক্রিও করেছেন। দবিরের ছোট ভাই মিঠুর বক্তব্যে সেই থেকে সন্দেহ আরও দানা বাঁধে। মিঠু বলেন, ‘সুরুজ্জামানের কাছ থেকে দবির হোসেন ভূঁঞা ১২ শতাংশ জমি কিনেছেন।’

অভিযুক্ত সুরুজ্জামান সরকারের বক্তব্য

এসব বিষয়ে জানতে সুরুজ্জামান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় মোবাইল ফোনে। হিন্দুদের উচ্ছেদ ও জমি দখল প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনি সামনাসামনি এসে কথা বলেন।’ এরপর প্রতিবেদক সশরীরে দেখা করলে তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে রায় পেয়েছি। হাজি শামসুল হক আমার কাছে সেই জমি বিক্রি করেছেন। দবির হোসেন ভূঁঞাও আমার কাছ থেকেই জমি কিনেছেন।’ এ সময় তার কাছে জমির দলিল দেখতে চাইলে বলেন, ‘আমাকে পরে একদিন ফোন দিয়ে দিন-তারিখ ঠিক করে দলিল দেখাবেন।’ এরপর একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। বরং বিভিন্ন মাধ্যম থেকে প্রতিবেদকের কাছে নানা হুমকি আসছে। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে প্রভাবশালী মহল থেকে অনেক চাপ অব্যাহত রয়েছে।


প্রতিবেদনটি গত ০১.১২.২০২৪ তারিখে দৈনিক খবরের কাগজ -এ প্রকাশিত হয়েছে।

আপনার অনুভূতি কি?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow